ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা কে?

ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা কে

ই-কমার্স, বা ইলেকট্রনিক কমার্স, হল ইন্টারনেট ব্যবহার করে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয়ের প্রক্রিয়া। ই-কমার্সের মাধ্যমে, ক্রেতারা তাদের বাড়ির বা অফিসের আরাম থেকে যেকোনো সময় বা যেকোনো স্থান থেকে পণ্য বা সেবা কিনতে পারে। ই-কমার্সের জন্মের সাথে জড়িত অনেক ব্যক্তি এবং সংস্থা রয়েছে, তবে সাধারণভাবে মাইকেল অ্যালড্রিচকে ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা কে তাদের গল্প এবং তাদের অবদানের আলোচনা, যা ডিজিটাল বাণিজ্যে বিপ্লব এনেছে, এখন এ বিসয় নিয়া আলোচনা করা যাক।

মাইকেল অ্যালড্রিচ

মাইকেল অ্যালড্রিচ একজন মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৭৯ সালে ইলেকট্রনিক শপিং আবিষ্কার করেন। অ্যালড্রিচের আবিষ্কারটি একটি টেলিফোন সংযোগের মাধ্যমে একটি পরিবর্তিত টিভির সাথে একটি লেনদেন-প্রসেসিং কম্পিউটার সংযোগ করে করা হয়েছিল। এটি নিরাপদ ডেটা প্রেরণের জন্য করা হয়েছিল।

অ্যালড্রিচের আবিষ্কারটি ই-কমার্সের বিকাশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল। এটি প্রথমবারের মতো ক্রেতাদের তাদের বাড়ির আরাম থেকে পণ্য কিনতে সক্ষম করেছিল। অ্যালড্রিচের আবিষ্কারের পর, ই-কমার্স দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব

অ্যালড্রিচ ছাড়াও, ই-কমার্সের বিকাশে অবদান রাখা আরও অনেক ব্যক্তিত্ব রয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন হল:

  • জেরাল্ড ওয়াল্ডম্যান: ওয়াল্ডম্যান একজন মার্কিন ব্যবসায়ী যিনি ১৯৮২ সালে বোস্টন কম্পিউটার এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন। বোস্টন কম্পিউটার এক্সচেঞ্জ ছিল প্রথম ইলেকট্রনিক মার্কেটপ্লেস।
  • ফিলিপ কিং: কিং একজন মার্কিন ব্যবসায়ী যিনি ১৯৮৪ সালে কম্পিউটার সিটি প্রতিষ্ঠা করেন। কম্পিউটার সিটি ছিল প্রথম ইলেকট্রনিক পাইকারি বাজার।
  • জেফ বেজোস: বেজোস একজন মার্কিন ব্যবসায়ী যিনি ১৯৯৪ সালে আমাজন প্রতিষ্ঠা করেন। আমাজন আজ বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন খুচরা বিক্রেতা।

ই-কমার্সের বিবর্তন

  • ই-কমার্সের বিবর্তনকে তিনটি প্রধান পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে:
  • প্রথম পর্যায় (১৯৭৯-১৯৯৪): এই পর্যায়ে, ই-কমার্স এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল। এই সময়ের মধ্যে, ই-কমার্স মূলত ব্যবসা-থেকে-ব্যবসায় (বি টু বি) লেনদেনগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
  • দ্বিতীয় পর্যায় (১৯৯৪-২০০৯): এই পর্যায়ে, ই-কমার্স দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এই সময়ের মধ্যে, ই-কমার্স ব্যবসা-থেকে-ভোক্তা (বি টু সি) লেনদেনগুলির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
  • তৃতীয় পর্যায় (২০০৯-বর্তমান): এই পর্যায়ে, ই-কমার্স একটি প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠে। এই সময়ের মধ্যে, ই-কমার্স বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরণের পণ্য এবং সেবাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

ইলেকট্রনিক কমার্সের ভবিষ্যত

ই-কমার্সের ভবিষ্যত উজ্জ্বল বলে মনে হচ্ছে। প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসার ই-কমার্সের আরও বৃদ্ধি এবং বিকাশকে চালিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ই-কমার্সের উন্নতির সাথে সাথে, এটি বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ই-কমার্স ব্যবসা এবং ভোক্তাদের জন্য উভয়ের জন্যই সুযোগ এবং সুবিধা প্রদান করে। ব্যবসাগুলির জন্য, ই-কমার্স নতুন বাজারে প্রবেশ এবং বিদ্যমান বাজারগুলিতে তাদের ভাগ বৃদ্ধির একটি উপর।

উপসংহার

সব মিলিয়ে, ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা কে তা নিঃসন্দেহে ডিজিটাল বিশ্বের অগ্রণী চিন্তাবিদ ও নবায়নকারী হিসেবে গণ্য করা যায়। তাদের অভিনব ধারণা ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে আজকের ই-কমার্স শিল্পের ভিত্তি গড়ে উঠেছে, যা আমাদের কেনাকাটার ধরণকে পুরোপুরি পরিবর্তন করে দিয়েছে। তাদের পথ অনুসরণ করে, আগামী প্রজন্মের উদ্যোক্তারা নিশ্চয়ই আরও উদ্ভাবনী ও ক্রান্তিকারী পদক্ষেপ নেবে, যা ই-কমার্স শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ ও বহুমুখী করে তুলবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *